ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইউএসএ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

আবহাওয়া ঠাণ্ডা, ভোটের হাওয়া কী গরম!

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
আবহাওয়া ঠাণ্ডা, ভোটের হাওয়া কী গরম!

নিউইয়র্ক থেকে: জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরের কাচঘেরা অংশ থেকে বাইরে পা ফেলতেই কনকনে শীতের হাওয়া গায়ে লাগলো। তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রিতে নেমেছে।

ট্যাক্সিতে উঠলে ড্রাইভার আলী অভিমত দিলেন, ‌গত দুই বছর ধরেই একটু আগে-ভাগে শীত পড়ছে নিউইয়র্কে। আবহাওয়ার ধরনটাই পাল্টে গেছে এখানে।

সেদিকে আগ্রহ না দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘ভোটের খবর কী?’

এটার জন্যই যেনো মুখিয়ে ছিলেন এশীয় একটি দেশের এই ট্যাক্সিচালক। বললেন, ‘আমরা হিলারিকে ভোট দেবো’।

আলীর মতে, এশিয়ার কোনো দেশ থেকে এসে এখানে রয়েছেন, এমন সবাই হিলারিকে ভোট দেবেন। আর নিজের কথা দৃঢ়চিত্তে ঘোষণা করলেন, এর আগে কখনোই ভোট না দিলেও এ বছর অবশ্যই দেবেন। শত কাজ থাকলেও যাবেন। আর আলী মনে করেন, এটা তিনি কেবল একা যে করবেন- তা নয়, এশীয়দের সবারই একই ভাবনা।

ভাবলাম, আবহাওয়া ঠাণ্ডা যতোই হোক... ভোটের হাওয়া গরম আছে।

আলীর এই ভাবনার সঙ্গে মিলে যায় জ্যকসনহাইটসে বাংলাদেশি প্রবীণ সাংবাদিক মনজুর আহমেদের সঙ্গে যে কথা হলো তার বক্তব্যও। মনজুর আহমেদ বলেন, ‘এটা সত্য, অভিবাসী প্রায় সব জনগোষ্ঠীই ট্রাম্পবিরোধী। তাদের মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেবেন, এমন কাউকে খুব একটা পাওয়া যাবে বলেও তিনি মনে করেন না।

তবে নিউইয়র্কের পথে আবুধাবিতে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার মতের সঙ্গে তাদের কারো মতই মেলেনি। তিনি এই নির্বাচনকে অদ্ভুত একটা কিছু দাবি করে বলেন, এমনটা হতে তিনি আর দেখেননি। তার মতে, ভোটারদের মধ্যে যারা সিদ্ধান্তহীন, তাদের মধ্যে এখন ভোট দেওয়ার আগ্রহটাই সৃষ্টি হচ্ছে না।

বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আর সে কারণে হিলারি নিজেই যখন তার ভোটের স্লোগান করেছেন, ‘উই আর টুগেদার’, ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন বলছেন, ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’। এমন সময় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যখনই বক্তৃতা করছেন, তিনি বলছেন, 'গো ভোট'।

এটাই আসল কথা, ভোট দিতে ভোটারকে কেন্দ্রে যেতে হবে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাধারণ সূত্রও সে কথাই বলে, ‘আপনার মতামত, আপনার ভোট নিশ্চয়ই আপনার অধিকার। আর সব অধিকারের সঠিক ব্যবহার তার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে। আপনার ভোটাধিকার প্রয়োগ না করলে আপনি আপনার পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত হতে নাও দেখতে পারেন’।

সুতরাং ভোট দিতে যেতে হবে।

বিষয়টিতে একমত হলেন মনজুর আহমেদ। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত আজকাল পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন এই প্রবাসী বাংলাদেশি সাংবাদিক।

না হবেনই বা কেন! তিনি বলেন, ‘এটাতো বরাবরেরই অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ ভোট দিতে যেতে চান না। তাদের অনেকেই রাজনীতিকে 'ফালতু' কাজ মনে করেন। সে কারণে আমরা দেখেছি, নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের মূল লক্ষ্য থাকে ভোটারকে ভোটদানে আকৃষ্ট করা’।

নিউইয়র্কের বর্তমান মেয়র বিল ডি ব্লাজিও ২০১৩ সালে যখন নির্বাচিত হন, তখন তার ভোটের স্লোগানটিও ছিল 'ফায়ার আপ'। মানে ‘জাগ্রত হও, ঘরে বসে থেকো না, কেন্দ্রে যাও, ভোট দাও’।

মনজুর আহমেদ বলেন, ‘টার্ন আউট এবার অবশ্যই একটা ফ্যাক্টর। আর সেজন্য রাজনৈতিক সচেতনতাও জরুরি। আর ভোট চাইলেই দেওয়া সম্ভব নয়, সেজন্য প্রস্তুতি রয়েছে। আপনাকে রেজিস্ট্রার্ড হতে হবে’।

‘এটাও সত্য, এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন বক্তৃতায় যাদের আঁতে ঘা লাগছে, তাদের অনেকেরই আসলে ভোট দেওয়ার সুযোগটাও নেই। আর তা স্রেফ তাদের গাফিলতির কারণে। বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও একই চিত্র’।

তাহলে ভোটের হাওয়া ততোটা কী গরম হতে পারছে? সে প্রশ্ন জাগলো মনে।

কী এই রেজিস্টার্ড ভোটার প্রসঙ্গ। আর কমিউনিটির সত্যিকারের চিত্র কী- তা নিয়ে থাকবে পরবর্তী খবর। প্রিয় পাঠককে অপেক্ষায় রাখছি।

***অদ্ভুত এক নির্বাচনের দেশে!
***
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করতে বাংলানিউজ’র মেনন যুক্তরাষ্ট্রে


বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
এমএমকে/আইএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।